”এস্থেটিক ছবি তোলার কিছু আইডিয়া: আপনার ফটোগ্রাফি স্টাইলকে করুন দৃষ্টিনান্দ”


 বর্তমানে তরুণ প্রজন্মের কাছে একটি ট্রেন্ডি ফটোগ্রাফি স্টাইল হলো এস্থেটিক ফটো। এস্থেটিক শব্দটাই কেমন যেন একটা সুদিং ভাইব দেয়। একটা শান্ত, আইক্যাচিং, সফট টাচ থাকে এস্থেটিক ছবিতে। এস্থেটিক ফটো স্টাইল টা আমার পার্সোনালি ভীষণ পছন্দের এবং কমফোর্ট একটা স্টাইল। এস্থেটিক ফটোগ্রাফি হলো এমন একটা শিল্প যা একটি সাধারণ ছবির অসাধারণ ফরমেট। একটা নরমাল বস্তুকে খুব সুন্দর ভাবে এই স্টাইলে ফুটিয়ে তোলা যায়। নরমালি আমরা যেই ছবি গুলো তুলে থাকি, এস্থেটিক ছবি তোলার ক্ষেত্রে সেই প্রসেস টা একটু আলাদা। আমি এখানে আপনাদের কিছু আইডিয়া শেয়ার করবো যা আপনার ছবিকে এস্থেটিক করে তুলতে সাহায্য করবে। তো দেরী না করে শুরু করা যাক —


প্রাকৃতিক আলো ব্যবহার করুন

কথাটা শুনতে ভীষণ সহজ মনে হচ্ছে তাই না!!! আসলে আপনি যদি প্রকৃতির আলো ছায়া মেইনটেইন করে ছবি তুলতে পারেন তাহলে এই আইডিয়াটি আপনার কাছে বেশ সহজই মনে হবে। প্রাকৃতিক আলো সবসময়ই ছবিকে সুন্দর করে তোলে। সুর্যোদয় এবং সুর্যাস্তের আলো সবসময়ই ভালো। এই সময়ের আলো বেশ  নরম এবং উষ্ণ হয় যা ছবিতে একটা মিষ্টি ভাব বজায় রাখে, আর ছবিটিতে এস্থেটিক একটা ভাইব দেয়।


সিমেট্রি এবং প্যাটার্ন 

কি!!! নামটি শুনে কি খুব কঠিন বিষয় মনে হচ্ছে!! তাহলে বলে রাখি বিষয়টি মোটেও জটিল কিছুই নয়। সিমেট্রি এবং প্যাটার্ন ছবিতে একটা শৃঙ্খলা এবং ভারসাম্য আনে। এটি চোখকে অনেক আকর্ষণ করে এবং ছবিকে এস্থেটিক করে তোলে। আপনি কোনো বিল্ডিং, রাস্তা, প্রাকৃতিক দৃশ্য ইত্যাদির সিমেট্রি ব্যবহার করতে পারেন।


রঙের সমন্বয় (Colour Combination) 


রঙের সমন্বয় একটা ছবি তোলার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ছবিকে সুন্দর করে তুলতে, আপনি কেমন কালার কম্বাইন্ড করছেন সেটা কিন্তু বেশ গুরুত্বের বিষয়। রঙের সমন্বয় ছবির সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি করে। আপনি কমপ্লিমেন্টরি রঙ নির্বাচন করতে পারেন যা একে অন্যের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। যেমন: লাল,নীল, সবুজ, কমলা ইত্যাদি। 


নেগেটিভ স্পেস


নেগেটিভ স্পেস ব্যবহার করে আপনি ছবির খুটিনাটি বিষয়গুলো খুব চমৎকার ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন এটি আপনার ছবিকে শ্বাসরুদ্ধকর এবং প্রানবন্ত করে তুলবে। এস্থেটিক ফটোগ্রাফিতে নেগেটিভ স্পেস একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 


প্রাকৃতিক উপাদান 


যেকোনো প্রাকৃতিক উপাদান একটা সাধারণ ছবিকে এস্থেটিক ছবি বানিয়ে দিতে পারে। প্রাকৃতিক উপাদান বলতে ফুল, পাতা, পানি ইত্যাদি ব্যবহার করে আপনার ছবিতে একটা প্রাকৃতিক এবং শান্তিপূর্ণ অনুভূতি যোগ করে।


 প্রতিফলন (Reflection)


রিফ্লেকশন বা প্রতিফলন আপনার ছবিতে একটা ভিন্ন মাত্রা যোগ করে এবং আপনার ছবিকে এস্থেটিক করে তোলে। এক্ষেত্রে আপনি কাচ, পানি বা কোনো রিফ্লেকটিভ এলিমেন্ট ব্যবহার করতে পারেন। 


ক্লোজআপ শট


ক্লোজআপ শট ছবির ডিটেইল খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে।  তাই ক্লোজআপ শট নিয়ে আপনি ছোট ছোট ডিটেইলস কে হাইলাইট করতে পারেন। এটি ছবিকে এস্থেটিক এবং আরো ইন্টারেস্টিং করে তোলে।


ব্লার এন্ড বোকেহ


ব্লারি ইফেক্ট এস্থেটিক ছবির ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে একটা মুল বিষয়। ব্লার বা বোকেহ ইফেক্ট ব্যবহার করে আপনি ছবির ব্যকগ্রাউন্ড অস্পষ্ট করে ছবির মূল বিষয়বস্তুকে ফুটিয়ে তোলে। এটি ছবিকে আরো প্রফেশনাল এবং এস্থেটিক করে তোলে। 


ফ্রেমিং( Framing)


ফ্রেমিং টেকনিকটা আমার মতে অল্প উপাদান পারফেক্ট ছবি তোলার একটা এস্থেটিক আইডিয়া। ফ্রেমিং টেকনিক ব্যবহার করে আপনি ছবির বিষয়বস্তুকে আরো বেশি গুরুত্ব দিতে পারেন। যেমন, আপনি দরজা, জানালা, গাছের ডাল ইত্যাদি ব্যবহার করে ফ্রেমিং করতে পারেন। 


এডিটিং (Editing) 


এস্থেটিক ছবি তোলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এডিটিং। একটা ছবি যতোই ভালো করে তুলুন না কেনো এডিটিং বা ফিনিশিং টাচ ভালো না হলে আপনার ছবি তোলাই বৃথা। আপনি লাইটরুম, ফটোশপ, বা অন্য কোনো এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে ছবির রঙ, কন্ট্রাস্ট, ব্রাইটনেস, শার্পনেস ইত্যাদি ঠিক করতে পারেন। 


সবশেষে বলতে চাই যে, এই আইডিয়া গুলো ব্যবহার করে আপনি আপনার ছবির স্টাইলকে এস্থেটিক করে তুলতে পারেন। আশা করি এই আইডিয়া গুলো আপনার কিছুটা হলেও কাজে দিবে। আপনার ফটোগ্রাফি যাত্রা আরো সুন্দর এবং সৃজনশীল হোক।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

"রুটিন মেনে পড়াশোনা: শিক্ষার্থীদের জন্য অপরিহার্য"

" পিরিয়ডের দিন গুলোতে মন ভালো রাখতে যা যা করবেন "